সিবিএন ডেস্ক:

এক বেতনে কেটে গেল পাঁচ বছর। এখন পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মাধ্যমে অপারেশন প্ল্যান(ওপি)আবার পাশ করানো হয়েছে। বেতনের অবস্থা সে আগের হিসাবে একই। ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত গ্রেড-১৪ তে ইনক্রিমেন্ট বিহীন ছয় বছর। এখন প্রকল্পের মেয়াদ শেষে আবার ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরের জন্য ওপি পাশ করানো হয়েছে। কিন্তু সেখানেও বেতন রেখেছে আগের হিসাবে। বেড়েনি এক টাকাও।

বার বার চাকরী রাজস্বখাতে স্থানান্থর এর কথা বললেও সংশ্লিষ্ট র্কতৃপক্ষ রাজস্বতে না নেওয়ায় গত ১২ এপ্রিল রামুর ২৫ জনের চাকরি রাজস্বখাতে স্থানান্তর এর আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টে রীট পিটিশন দায়ের করেন এস,এম রেজাউল করিম নামে এক বঞ্চিত যুবক। যার রীট নং-৫৫৩০/২০১৭ইং।

রীট আবেদন প্রাথমিক শুনানী করে কেন ২৫ জনকে রাজস্বখাতে স্থানান্তর করা হবে না তা জানতে চেয়ে ৭ আগষ্ট রুল জারি করেছে হাইর্কোট।

একই সঙ্গে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, প্রকল্প পরিচালকসহ সাত জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাশের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রবিবার এ আদেশ দেন। আদালতে রীট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানী করেন ব্যরিস্টার মাসুদ আক্তার।

দেশের তৃণমূল জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবার লক্ষ্যে নিভৃত গ্রামাঞ্চলে গড়ে তোলা প্রায় চৌদ্দ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থানীয় বাসিন্দদের স্বাস্থ্য সেবার প্রতীক হয়ে উঠেছে। সেখানে প্রসূতি মায়ের নিরাপদ প্রসব সহ বিভিন্ন গুরুতত্বপূর্ণ সেবা ও পরামর্শ দ্ওেয়া হচ্ছে। দেশের জনগণকে একটি নির্দিষ্ট মান সম্মত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গ্রামীণ জনগনের দোর গোড়ায় একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্র থেকে ‘অত্যাবশ্যকীয় সেবা প্যাকেজের’ মাধ্যমে সমন্নিত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে গ্রাম/ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন ও কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকে একজন করে কমিউনিটি হেল্থ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে আর জনগণ পাচ্ছে হাতের নাগালে স্বাস্থ্য সেবা। বর্তমান সরকারের গৃহীত রূপকল্পের ২০২১ ও ২০৪১ সালের ভিশন ও মিশন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে মানব সম্পদের উন্নয়নের জন্য ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার অব্যবহিত পর পরই দেশের সাধারণ জনগণকে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের লক্ষ্যে সরকার পর্যায়ক্রমে উপজেলা হাসপাতাল,জেলা হাসপাতাল এবং টারসিয়ারী পর্যায়ে অধিক সংখ্যক মেডিকেল কলেজ স্থাপন করার উদ্যেগ গ্রহণ করে। পরবর্তীতে সরকার ২০০০ সাল নাগাদ (সকলের জন্য স্বাস্থ্য) অঙ্গীকার নামায় স্বাক্ষর করে এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা সংক্রান্ত কার্যক্রমে ব্যাপকতা ও ব্যপ্তি আরো প্রসারিত করে ।দেশের স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রের তুলনায় জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে। দেশের পল্লী এলাকার জনগণকে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের সুবিধার্থে ও প্রাথমিক সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার গ্রামীণ পর্যায়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্র তথা কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্টার উদ্যেগ নেয়। দেশের শহর এলাকায় সরকারী বেসরকারী পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য কেন্দ্র নির্মিত হওয়ার পর ১৯৯৮ সালের শেষের দিকে সরকার পল্লী এলাকায় কমবেশী ৬০০০ জনগোষ্টির জন্য একটি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ২০০১ সালের মধ্যে ১০,৭২৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ এবং ৮০০০ কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করতে সক্ষম হয়। কিন্তু মাঝখানে বিএনপি সরকারে এসে ২০০১ সালে কমিউনিটি ক্লিনিক গুলো বন্ধ করে জনগণের স্বাস্থ্য সেবার পথ রুখে দেয়। আবার ২০০৯ সালে বর্তমান শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় এসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে রিভাইটালাইজেশন অব কমিউনিটি হেলথ কেয়ার ইনশিয়েটিভস ইন বাংলাদেশ র্শীষক প্রকল্পের মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিক পুনরায় চালু করে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১৪,০০০ কমিউনিটি ক্লিনিক চালু রয়েছে। রামুতে রয়েছে ২৩টি,চালুর পথে রয়েছে আরো চারটি। পল্লী এলাকার জনগণকে বিশেষতঃ দরিদ্র ও সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্টিকে একটি কেন্দ্র থেকে সমন্বিত প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা।

এই উদ্দ্যেশ্য অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে ১৯৯৮ সালে কমিউনিটি ক্লিনিকে যাত্রা শুরু হলেও আজ থেকে ১৭ বছর পুর্বে ২০০০ সালে ২৬শে এপ্রিল দেশের প্রথম কমিউনিটি ক্লিনিক গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতি ইউনিয়নের গিমাডাঙ্গা গ্রামে তৎকালিন ও বর্তমান সরকার প্রধান মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক গিমাডাঙ্গা কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্ভোধন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পর্যায়ক্রমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম শুরু হয় ও বর্তমানে অব্যহত রয়েছে ।

রামু উপজেলা সিএইচসিপি এসোসিয়েশনের সভাপতি ও ২০১৩ সালে কক্সবাজার জেলার শ্রেষ্ঠ মডেল বড়বিল কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি এস,এম রেজাউল করিম জানান, প্রতিটি ইউনিয়নে ২/৩ টি করে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন ও কমিউনিটি হেল্থ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) নিয়োগের মাধ্যমে উক্ত ক্লিনিক গুলো হতে মা-শিশু,নবজাতক, গর্ভবতী মহিলাসহ সকল ধরণের রোগীকে প্রথামিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। রোগী সেবা পেল্ওে দিন দিন মানসিক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে দেশের প্রায় চৌদ্দ হাজার সিএইচসিপি। নিয়মিত বেতন ভাতা পায় না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে গত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩ সনে সিএইচসিপিদের চাকরী রাজস্বখাতে স্থানান্থর এর নীতিগত সিদ্বান্তের কথা চিঠির মাধ্যমে সিভিল র্সাজনদের জানান তৎকালীন পরিচালক প্রশাসন ডাঃ মোঃ শাহন্ওেয়াজ।আবার ২২ শে এপ্রিল ২০১৪ সনে তৎকালিন প্রকল্প পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব ডাঃ মাখদুমা র্নাগিস চাকরি রাজস্বখাতে স্থানান্তরের নিমিত্তে সিএইচসিপিদের সার্ভিস বুক খোলা ও র্বাষিক গোপনীয় প্রতিবেদন পাঠানোর কথা বলে চিঠির পাঠান সিভিল র্সাজনদের নিকট।সিএইচসিপিদের চাকরি প্রকল্পের মেয়াদ শেষে রাজস্বখাতে স্থানান্থারে আশাবাদী ছিল কমিউনিটি ক্লিনিক হতে সেবা প্রদানকারী সিএইচসিপি। আরসিএইচসিআইবি প্রকল্পের মেয়াদ শেষে জুন/২০১৫ইং হতে অপারেশন প্ল্যানভুক্ত করে কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ার প্রকল্পের মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিকের র্কাযক্রম চালু রাখা হয়। কিন্তু অধ্যাবধি চাকুরী রাজস্ব না হ্ওয়ায় হাইর্কোটের দ্বারস্ত হন সিএইচসিপিদের অনেকে।